সুভাষ চন্দ্র দাশ,ঝড়খালি – তিন তিন টি বাঘ,২১ টি হরণি,১১ টি কুমীর রয়েছে ঝড়খালি পুনর্বাসন কেন্দ্রে।গরমে তাদের যেন কোন প্রকার অসুবিধা না হয় তার দিকে নজর দিলো বনদফতর।চারিদিক খোলা,খড়ের ছাউনি ঘরের মধ্যে রয়েছে ২১ টি হরিণ,কুমীরদের প্রসঙ্গ একে বারেই নেই। কারণ তারা সবসময় জলেই রয়েছে। তবে গরমে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের জন্য একটু অন্যভাবে বাড়তি ব্যবস্থা করেছে বনদফতর। বনের রাজা বলে কথা।
একটি নয়,একে বারেই জোড়া ফ্যান। স্নান করার ঠান্ডা জলের বাথটাব। আছে ওআরএস বানানো জল। শুধু কি তাই!তার পরেও দিনে অন্তত তিনবার করে ভিজিয়ে দেওয়া হচ্ছে লোমশ শরীরকে। রাজকীয় আয়জনের কোন খামতি নেই। শুধু তাই নয় প্রতিদিনের খাবার ডায়েট চাট বানিয়ে দিচ্ছে ভেটেনারি সার্জেন্ট। না কোন ভিভিআইপি সেলিব্রেটির পরিচর্যা নয়।একেবারে পৃথিবী খ্যাত সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার মহারাজা ও মহারানী’র গরমে ভালো থাকার ব্যবস্থা।
গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যে চলছে অসম্ভব রকমের গরম। আর এই গরমে দক্ষিণবঙ্গের লু পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আর সেই গরম থেকে বাঁচতে সুন্দরবনের একমাত্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকা রয়াল বেঙ্গল টাইগারদের ভালো রাখাটা এখন বনদপ্তর এর কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঝড়খালির পুনর্বাসন কেন্দ্রে দুটি বাঘ, একটি বাঘিনী রাখা আছে।
গরমে এই বাঘ বাঘিনীদের খাওয়ার মেনুতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। শুধু তাই নয় তাদের শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে এই পুনর্বাসন কেন্দ্রের মধ্যে। প্রতিটি বাঘের কুঠুরিতে দেওয়া আছে দুটি করে হাই স্পিড ফ্যান। প্রতিটি বাঘের জন্য আলাদা করে বাথটাব। তাছাড়া প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ লিটার ওআরএস মেশানো জল খাওয়ানো হচ্ছে। তবে মোষের মাংস যে পরিমাণ প্রত্যেকদিন খাওয়ানো হতো সেরকমই রাখা হয়েছে পরিমাণটি। আর তাই কোনভাবেই যাতে শরীর না খারাপ হয় এই প্রচণ্ড গরমে তার জন্যই প্রতিনিয়ত নজর রাখা।
যদিও নোনা জলে গা ডুবিয়ে এত দিন অভ্যস্ত ছিল তারা। আর সেই ভাবেই বড় হয়েছে বাঘ বাঘিনী। এবার আর নোনাজল নয় একেবারে পরিস্রুত মিষ্টি জলে ডুবিয়ে নধর শরীরটাকে চাঙ্গা করে নেওয়া। তাছাড়া প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার করে জল দিয়ে স্নান করানোর ব্যবস্থা করেছেন বনকর্মীরা। আর এই ভাবেই আপাতত চলছে ঝড়খালি সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রকল্পের বাঘদের গরম কাটানোর উপায়।