সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – যে কোন মুহূর্তে আছড়ে পড়তে পারে অশনি নামক ঘুর্ণিঝড়,হতে পারে প্রবল বর্ষন।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এমন খবরে সমগ্র সুন্দরবনবাসী সহ ক্যানিংয়ের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার মানুষ আতঙ্কের প্রহর গুনছেন।সুন্দরবনের মাতাল নদী মাতলা। এই মাতলার তীরে রয়েছে ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েত। বর্তমানে এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের বসবাস।মাতলা নদীর তীরবর্তী সংলগ্ন ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের চ্যাটার্জী ঘাট এলাকার প্রায় আড়াই কিলোমিটার নদী বাঁধের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে কোন মুহূর্তে নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে নদী তীরবর্তী একের পর এক গ্রাম।ভিটে ছাড়া হতে পারে প্রায় তিন হাজারেরও অধিক গ্রামবাসী।অশনি আতঙ্কে গোটা এলাকায় চলছে ত্রাহি ত্রাহি রব। এমত অবস্থায় মঙ্গলবার বিকালে এলাকার ভগ্নদশা নদীবাঁধ পরিদর্শন করে সাধারণ মানুষ কে অভয় দিয়ে আশ্বস্থ করলেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস।
বিধায়ক জানিয়েছেন ‘অশনি আতঙ্কে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে অসহায় হয়ে না যায়,তার জন্য সরকার তাঁদের পাশেই অতন্দ্র প্রহরীর মতো ২৪ ঘন্টা পাশে রয়েছে।
বিধায়ক পরেশরাম দাস আরো বলেন ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সরকার এবং প্রশাসন একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। বিশেষ করে ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ইতিমধ্যে কয়েক হাজার ত্রিপল,কয়েক হাজার কুইন্টাল চাল,চিড়ে,শুকনো খাবার,ওষুধপত্র এবং লাইটের ব্যবস্থা মজুত করা হয়েছে। যাতে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছড়ে পড়লে সাধারন মানুষ নিরাপদ ভাবে থাকতে পারেন।পাশাপাশি ভগ্নদশা মাতলার আড়াই কিলোমিটার নদীবাঁধ যাতে করে রক্ষা করা যায় তার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে জেসিবি দিয়ে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ভাবে ভঙ্গদশা নদীবাঁধ মেরামত করার কাজ শুরু হবে।যদিও এই নদীবাঁধটি পাকাপোক্ত করার জন্য ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যা দুর্যোগ কেটে গেলে নতুন ভাবে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে।’
অন্যদিকে গ্রামবাসীদের দাবী বিগত ২০০৯ সালের আয়লা ঝড় থেকে এপর্যন্ত যতবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে প্রতিবারই এলাকার নদীবাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর এবার নদীবাঁধ শক্তপোক্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক পরেশরাম দাস। দেখা যাক এবার কি হয়!
অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশাঙ্কা থাকলেও নদীবাঁধ নিয়ে বিধায়করের আশ্বাসের উপর ভরসা করে চাতকের মতো অপেক্ষায় এলাকার মানুষজন।