রাখে হরি মারে কে?  জলে ডুবে যাওয়া মৃতপ্রায় শিশু কে সুস্থ করে তুললেন চিকিৎসক।

0
301

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – জলে ডুবে যাওয়া মৃতপ্রায় একরত্তি শিশু কে সুস্থ করে তুললেন চিকিৎসকরা।এমন ঘটনায় শিশুর পরিবার পরিজন সহ এলাকার স্থানীয়রাই চিকিৎসকের প্রশংসায় পঞ্চমূখ।যদিও চিকিৎসকরা জানিয়ে তাঁরা তাঁদের কর্তব্য যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করেছেন মাত্র।
ঘটনাস্থল বারুইপুর থানার অন্তর্গত বেতবেড়িয়া সংলগ্ন হারদহ গ্রাম।বাড়িতেই রান্না ঘরের মধ্যে চা তৈরী করছিলেন নূরবানু লস্কর।সেই সময় তাঁর পিঠে উঠে খেলা করছিল বছর দুই বয়সের নাতি সানি লস্কর।খেলতে খেলতে আচমকা ওই শিশু সকলের অলক্ষ্যে বাড়ির বাইরে চলে যায়। বাড়ি পাশেই একটি পুকুরে পড়ে যায়। হাবুডুবু খেতে খেতে এক সময় অচৈতন্য হয়ে পুকুরে মাঝে ভাসতে থাকে ওই শিশু।এদিকে ওই শিশুর দাদি(ঠাকুরমা) চা তৈরী করে চায়ে চুমুক দিতে যাওয়ার মুহূর্তের তাঁর নাতির কথা মনে পড়ে। এরপর খোঁজ শুরু হয়। কোথায় না পেয়ে পরিবার লোকজন এপাড়া ওপাড়া খোঁজ খবর শুরু করে।কান্নায় ভেঙে পড়ে। ইতিমধ্যে ওই শিশুর ঠাকুমা বাড়ির অদূরে পুকুরের মাঝে নাতি কে ভাসতে দেখে।কোন কিছু না ভেবে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সাঁতার দিয়ে পুকুরের মাঝখান থেকে নাতি কে উদ্ধার করে ডাঙায় তোলেন। দৌড়ে আসেন পরিবারের অন্যান্যরা।সেই মুহূর্তে শিশুটি কোন প্রকার নড়াচড়া না করায় কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন।তড়িঘড়ি ওই শিশুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঘুঁটিয়ারী শরীফ গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়।সেখানে বেশকিছুক্ষণ চিকিৎসার পর শিশুটির শারিরীক অবস্থার কোন রকম পরিবর্তন না হওয়ায় বিপদ হতে পারে বুঝেই তড়িঘড়ি ওই শিশুকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসার জন্য অচৈতন্য শিশু কে নিয়ে তড়িঘড়ি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে হাজীর হয়।সেখানেই শিশু বিশেষঞ্জ চিকিৎসক আলমগীর হোসেন অচৈতন্য শিশুর চিকিৎসা শুরু করেন। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর শিশুর পেট থেকে সিংহভাগ জল বের হয়ে করতে সক্ষম হন চিকিৎসকরা।পরে অতি ধীরগতিতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে থাকে জলে ডোবা ওই একরত্তি শিশু। এরপর দ্রুততার সাথে তাকে অক্সিজেন দিয়ে কয়েক ঘন্টায় প্রায় স্বাভাবিক করে তোলেন। পরিবারের লোকজনের ম্লান মুখে তখন হাসি ফোটে।সুস্থ হয়ে ওঠে জলে ডোবা একরত্তি শিশু।বুধবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেন চিকিৎসকরা।

শিশুর বাবা নূর উদ্দিন লস্কর জানিয়েছেন ‘মৃতপায় শিশুর প্রাণ ফিরে পেয়ে ডাক্তার কে যে কি বলে ধন্যবাদ দেবো তা আমার ভাষা জানা নেই।তিনি ভগবান তুল্য।’

শিশুর মা সাকেরা লস্কর জানিয়েছেন ‘সেই মুহূর্তে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভগবান তুল্য শিশু বিশেষঞ্জ চিকিৎসক আলমগীর হোসেন না থাকলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতো।চিকিৎসকদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’
অন্যদিকে নাতিকে কাছে পেয়ে নূরবানু লস্কর জানিয়েছেন ‘আল্লার কৃপায় চিকিৎসকদের সাহায্যে নাতি কে ফিরে পেয়েছি।তাঁদের কে অসংখ্য ধন্যবাদ।