আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ “যে হাতে পুজি আমি দেব শূলপাণি সেই হাতে নাহি পুজি চেঙমুড়ী কানি।”…. কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাঁদ সওদাগর মনসা দেবীর কাছে পরাজয় মেনে তার পূজা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। চাঁদ সওদাগর নিজো প্রতিজ্ঞা অটল থাকতে পারেননি। হয়তো বাম হাতে পুজো করে ছিলেন। সেই থেকে মর্ত্য ভূমিতে মনসা পূজার প্রচলন হয়। গ্রাম শহর সর্বত্রই মনসা পূজোর ব্যাপক প্রচলন আছে। কিন্তু বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের অন্তর্গত গোবিন্দপুর রুইদাস পাড়ায় হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মহামিলনে মনসা পূজা এবং মনসা দেবীর মন্দির তৈরীর বিরল নজিরের সাক্ষী রইল এই বাঁকুড়ার মানুষ। উভয় সম্প্রদায় আবার প্রমাণ করলেন মানব ধর্ম শ্রেষ্ঠ ধর্ম। আট থেকে আশি বছরের সুদূর তারকেশ্বর থেকে পবিত্র জল এনে মা মনসার নতুন মন্দিরের অভিষেক সূচনা করা হলো। এই মন্দির শতাব্দীপ্রাচীন। অনেক আগে এখানে ঘন জঙ্গল ঝোঁপঝাড় ছিল। রুইদাস সম্প্রদায় মাটির নিচ থেকে পোড়ামাটিরএকটি মনসা মূর্তি মাটি খুঁড়তে গিয়ে দেখতে পান। তারপর দেবীর স্বপ্নাদেশে এই এলাকায় মনসা পূজার প্রচলন হয়। এই গ্রামের ষোলআনা মনসা পূজা। সব সম্প্রদায়ের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান করে পুজোটিকে অনন্য মাত্রা ধারণ করেছে। মন্দির নির্মাণের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ও অর্থ প্রদান করেছেন। আট থেকে আশি এবং মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো ।আগামীকাল মা মনসা পূজা। চলবে তিন দিন নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।