সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – সুন্দরবন জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে জলদস্যুদের হাতে আক্রান্ত হলেন ১১ জনের এক মধু সংগ্রহকারী দল। আক্রান্ত মৌলেদের বাড়ি প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার বালি ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বর্তমানে আক্রান্ত মৌলেদের মধ্যে ৮ জন গোসাবা ব্লক হাসপাতালে ও ৩ জন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আক্রান্ত মৌলেরা হলেন অনন্ত মন্ডল, ইদ্রিশ আলি জমাদার,রবীন্দ্র নাথ গায়েন,বিশ্বনাথ মন্ডল, অনন্ত মন্ডল,সঞ্জয় আড়ি,রমেশ গায়েন, ধনঞ্জয় মন্ডল, শঙ্কর মন্ডল, সুনীল মন্ডল,সুক্ষ মন্ডল।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে গত ৮ এপ্রিল থেকে সুন্দরবন জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করার কাজ শুরু হয়েছে সরকারী ভাবে। বনদফতরের বৈধ অনুমতি নিয়ে ৪৩ টি দল সুন্দরবনের সজনেখালি থেকে গভীর জঙ্গলে রওনা দিয়েছিল ৮ এপ্রিল।
আক্রান্ত মৌলেরা মধু সংগ্রহের কাজ করে সোমবার রাতে পীরখালি জঙ্গল সংলগ্ন গাজীর খাল এলাকায় নৌকার মধ্যে ঘুমিয়েছিলেন। রাত প্রায় ১১ নাগাদ দুটি নৌকা করে জনা পঁচিশ এক ডাকাত দল মৌলেদের কে ঘিরে ধরে। তাদের কে লাঠি,লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে নৌকার হাল ও অন্যান্য জিনিসপত্র নদীতে ফেলে দেয়। পাশাপাশি সংগৃহিত ৭-৮ কুইন্টাল সংগ্রহ করা মধু জলদস্যুরা নিয়ে নেয়। পরে ওই মৌলেদের কে নিয়ে দূরে একটি জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে জলদস্যুরা পালিয়ে যায়।রাতের অন্ধকারে জঙ্গলের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় যন্ত্রনায় কাৎরাতে থাকে মৌলেরা।মঙ্গলবার ভোরের আলো ফুটতেই জোয়ার শুরু হলে জঙ্গল থেকে গাছের ডাল ভেঙে নিয়ে নৌকা চালিয়ে জখমরা হাজীর হয় পীরখালি ফরেষ্ট অফিসে। সেখানে বনদফতরের আধিকারীদের কে ঘটনার কথা জানায়। বনদফতরের লোকজন তড়িঘড়ি ১১ জন মৌলে কে উদ্ধার করে চিকাৎসার জন্য গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে ইদ্রিশ আলি জমাদার,রবীন গায়েন,অনন্ত মন্ডলদের অবস্থা সংকটজনক হলে তাদের কে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা।অন্যদিকে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে জলদস্যুদের এমন মর্মান্তিক আক্রমণে চিন্তিত অন্যান্য মৌলেদের পরিবার পরিজন।
আক্রান্ত মৌলেদের ধারণা জলদস্যুরা বাংলাদেশ ও উত্তর ২৪ পরগনার সামশের নগর এলাকার।
Leave a Reply